Table of Contents
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটি বিএনপির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখছে এবং অন্তত ২০টি আসনে সমঝোতা ও মন্ত্রিসভায় তিনটি পদ পাওয়ার দাবি তুলেছে।
সূত্র বলছে, আলোচনা আপাতত অনানুষ্ঠানিক হলেও এনসিপির কৌশল স্পষ্ট—বিএনপির সঙ্গেই হাত মেলানোর প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। তবে জামায়াতে ইসলামীর দিকেও নরম দৃষ্টি রয়েছে দলটির কিছু নেতার। বিএনপি অবশ্য চায় না, এনসিপি জামায়াতের সঙ্গে কোনো জোটে যাক।
এনসিপি নেতৃত্ব মনে করছে, দলটি এখন এককভাবেও মাঠে নামার মতো প্রস্তুতি নিচ্ছে, তবে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত দরজা খোলা রাখবে সমঝোতার জন্য।
কার কোন আসনে চোখ
এনসিপির শীর্ষ নেতাদের বেশিরভাগই নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন।
- আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম লড়তে চান ঢাকা–১১ থেকে,
- সদস্যসচিব আখতার হোসেন রংপুর–৪ থেকে,
- মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর আগ্রহ ঢাকা–১৮ বা চাঁদপুর–৫,
- জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব ঢাকা–১৪ থেকে,
- আর তাসনিম জারার লক্ষ্য ঢাকা–৯।
বিএনপি ইতিমধ্যে বেশিরভাগ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করলেও, ঢাকা–৯ ও ঢাকা–১৮ এখনো ফাঁকা আছে—যা এনসিপির আশার জায়গা।
এছাড়া নওগাঁ, কুমিল্লা, সিরাজগঞ্জ, নোয়াখালী, নারায়ণগঞ্জসহ আরও বিভিন্ন আসনে অর্ধশতাধিক এনসিপি নেতা প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
সম্ভাব্য ‘ভিআইপি প্রার্থী’
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ও মাহফুজ আলমও এনসিপির ছায়ায় নির্বাচনে আসতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে। তাঁরা আগ্রহী ঢাকা–১০ ও লক্ষ্মীপুর–১ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে। বিএনপি এই দুই আসন ফাঁকা রেখেছে কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
নতুন দল, নতুন ভাবনা
এনসিপি নিজেদের ‘মধ্যপন্থী রাজনৈতিক শক্তি’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চায়—‘ডানপন্থী’ তকমা এড়াতে সচেষ্ট তারা। জামায়াতের প্রস্তাবেও সাড়া না দিয়ে দলটি এখন একক পরিচয়ে উঠে আসার চেষ্টা করছে।
দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিন বলেন,
“আমরা এখন এককভাবেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। কার সঙ্গে জোট বা সমঝোতা হবে কি না, সেটা নির্ভর করবে শেষ মুহূর্তের রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর।”
নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন
এরই মধ্যে এনসিপি গঠন করেছে কেন্দ্রীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটি—প্রধান করা হয়েছে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীকে। এই কমিটি প্রার্থী বাছাই, প্রচার–প্রসার, মাঠপর্যায়ের সমন্বয়সহ সার্বিক প্রস্তুতির দায়িত্বে থাকবে।
সব মিলিয়ে, বিএনপি–এনসিপি সমঝোতা যদি বাস্তবায়ন হয়, তবে নির্বাচনী মাঠে ‘নতুন শক্তির ভারসাম্য’ তৈরি হতে পারে—যা বিএনপির জন্য যেমন কৌশলগত সুবিধা, তেমনি এনসিপির জন্য হতে পারে রাজনীতিতে বড় উত্থানের সুযোগ।
